ঢাকা, ১৭ জুলাই (ঢাকা পোস্ট) : কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে সংঘাতে ঠেলে দিয়ে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ৷ বুধবার (১৭ জুলাই) (২০২৪) একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপি চক্রের অনুপ্রবেশ, রাজাকারদের পক্ষে স্লোগান এবং উদ্ভূত সংঘাতময় পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য এক জরুরি মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন বক্তারা।
‘নির্মূল কমিটি’র সভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান আসিফ মুনীর।
সভায় কোটা সংস্কারের ন্যায্যতা, সংক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের আবেগ ও অনুভূতিকে পুঁজি করে তাদের আন্দোলনে স্বাধীনতারিবোধী মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির অনুপ্রবেশ, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে ’৭১-এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী গণহত্যাকারী, ধর্ষণকারী রাজাকারদের মহিমান্বিত করে স্লোগান দেওয়া, গতকাল ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু এবং শত শত আহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয় ‘সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের জন্য ছাত্রছাত্রীদের চলমান আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে আরম্ভ হলেও সুযোগ বুঝে বিএনপি-জামায়াত চক্র বাইরে থেকে সমর্থনের কথা বলে তরুণদের একটি ন্যায়সঙ্গত ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণতি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এতে অনুপ্রবেশ করে। জামায়াত-বিএনপির ছাত্রকর্মীরা দল নিরপেক্ষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগে বিভিন্ন সময়ে সড়ক অবরোধ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিরোধ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
তারা বলেন, এ দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন। আমরা এ ধরনের সংঘাতে অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা কখনও ছাত্রদের হাতে অস্ত্র দেখতে চাই না। গত এক যুগেরও অধিক সময় আমরা লক্ষ্য করছি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্র সংঘাত ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশী প্রভুদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন সময়ে ছাত্র ও জনতার বিভিন্ন ন্যায়সঙ্গত ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে তারা অনুপ্রবেশ করে সেগুলোকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে ’৭১-এ পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো ব্যর্থ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানাতে চাইছে।
‘কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিনাশী অপশক্তি তাদের ন্যায়সঙ্গত ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনকে যাতে কোনো ভাবে দেশের অর্থনীতি ও জনজীবন বিপর্যস্ত করে সরকার পতনের উদ্দেশে যেন ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে নেতৃবৃন্দকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। ’৭১-এ মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবন, পারিবারের নিরাপত্তা সব কিছু বাজি রেখে মরণপণ যুদ্ধ করে পাকিস্তানিদের ২৪ বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন বলেই এদেশ আজ অর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে অনেক পেছনে ফেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan